অস্ট্রেলিয়া সফরের ব্যর্থতা এখনও বিঁধছে রোহিতকে, আইপিএলের মাঝেও অধিনায়কের ভাবনায় ইংল্যান্ড

ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সফল অধিনায়ক রোহিত শর্মা। মাঠে ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়ানোর পাশাপাশি, নেতৃত্ব দিয়েও বহুবার দলের কঠিন সময়কে সহজ করে তুলেছেন তিনি।

তবে, সব অর্জনের মাঝেও কিছু ব্যর্থতা থাকে যা কখনোই ভুলে থাকা যায় না। তেমনই একটি স্মৃতি রোহিতের মনে এখনও দগদগে হয়ে আছে—২০২৩ সালের অস্ট্রেলিয়া সফর এবং বিশ্বকাপ ফাইনালের পরাজয়।

ফাইনালের হার, এখনও মনে পোড়ে

২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত ছিল অপরাজেয়। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সেমিফাইনাল পর্যন্ত এসেছিল দল। কিন্তু ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হঠাৎ ছন্দপতন। সেই হারে হতাশ হয়েছিলেন কোটি ভক্ত, কিন্তু সবচেয়ে বেশি পোড়েন রোহিত নিজেই। কারণ, এটি ছিল তার অধিনায়কত্বের পরীক্ষা—যেখানে একটুখানি ভুলও বড় ব্যর্থতায় পরিণত হয়।

এই ব্যর্থতার ছায়া এখনও তাড়া করছে রোহিতকে। সেটা স্পষ্ট বোঝা যায় যখন আইপিএলের মতো ঘরোয়া প্রতিযোগিতাতেও তার মুখে উঠে আসে জাতীয় দলের প্রসঙ্গ, বিশেষ করে ইংল্যান্ড সফর

আইপিএলে মন, কিন্তু নজর ইংল্যান্ডে

আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে ব্যস্ত সময় পার করলেও রোহিতের মন পড়ে আছে ইংল্যান্ড সফরের দিকে। সংবাদ সম্মেলনে একাধিকবার তাকে শোনা গেছে, “ইংল্যান্ডে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু না করলে পেছনে পড়ে যাব।”

এই মন্তব্য থেকেই বোঝা যায়, রোহিত কেবলমাত্র নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে ভাবছেন না, বরং পুরো দলের কৌশল, পরিকল্পনা, মানসিকতা—সবকিছুতেই তিনি থাকছেন সচেতন।

ইংল্যান্ড সফর মানেই কঠিন পরীক্ষা

ইংল্যান্ডে খেলতে গেলে চ্যালেঞ্জ থাকে আলাদা। সেখানে পিচে সুইং বেশি, আবহাওয়া প্রতিনিয়ত বদলায়, আর ইংলিশ বোলাররা নিজেদের কন্ডিশনে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। তাই দল হিসেবে ভাল করার জন্য শুধু স্কিলই নয়, চাই মানসিক দৃঢ়তা ও পূর্বপ্রস্তুতি। রোহিত চাইছেন, এবার যেন আগেভাগেই সেই প্রস্তুতি সেরে নেওয়া যায়।

নেতৃত্বের ছাপ মাঠের বাইরেও

রোহিত শর্মার সবচেয়ে বড় গুণ সম্ভবত তার দূরদর্শিতা। তিনি জানেন, শুধুমাত্র আইপিএলে ভালো খেলা তার মূল লক্ষ্য নয়। জাতীয় দলের জার্সিতে সাফল্যই তাকে সত্যিকারের নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি দেবে। তাই তিনি নিজের দায়িত্বকে সীমিত রাখছেন না। তরুণ খেলোয়াড়দের দিকনির্দেশনা দেওয়া, দলের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা করা—সব কিছুতেই তিনি সক্রিয়।

আইপিএলের চাপেও ভাবনায় ভবিষ্যৎ

অনেকেই বলেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ভালো করতে হলে পুরো মনোযোগ সেদিকেই রাখা উচিত। কিন্তু রোহিত প্রমাণ করছেন, সত্যিকারের নেতা তিনিই, যিনি বর্তমান সামলে ভবিষ্যতের জন্যও প্রস্তুতি নেন। আইপিএলের ম্যাচে ব্যাট হাতে যতটা সক্রিয় তিনি, ততটাই মনোযোগী ভারতের আন্তর্জাতিক সূচি নিয়ে।

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই পরাজয় হয়তো রোহিতের ক্যারিয়ারে একটি কালো দাগ হয়ে থাকবে, কিন্তু সেই দাগ থেকেই তিনি তৈরি করছেন নতুন গল্প। আইপিএলের মাঝেও যখন ইংল্যান্ড সফরের পরিকল্পনা করে চলেছেন, তখন স্পষ্ট হয়ে যায়—রোহিত শর্মা কেবল একজন ক্রিকেটার নন, তিনি একজন কৌশলী নেতা, যিনি ভারতের ক্রিকেট ভবিষ্যতের জন্য নিঃশব্দে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।

পাঠকের জন্য প্রশ্ন:

তোমার কি মনে হয়, রোহিতের এই আগাম কৌশল পরিকল্পনা আসন্ন ইংল্যান্ড সফরে ভারতকে সাফল্য এনে দিতে পারবে?

Leave a Comment