ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র বাবার পথে হেঁটে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরু। বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় নামগুলোর একটি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তার পথ ধরে এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছেন তারই ছেলে, ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র। দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছিল, কোন দেশের জাতীয় দলে খেলবেন এই ফুটবল প্রতিভা। শেষ পর্যন্ত বাবার দেশ পর্তুগালকেই বেছে নিলেন তিনি।
১৪ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়রকে প্রথমবারের মতো ডাকা হয়েছে পর্তুগাল অনূর্ধ্ব-১৫ দলে। এই ডাকের মাধ্যমে শুরু হলো তার আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ার। ভক্তদের মধ্যে তাই তৈরি হয়েছে ব্যাপক আগ্রহ ও উচ্ছ্বাস।
আল নাসর থেকে জাতীয় দলের ডাক
বর্তমানে সৌদি আরবের আল নাসর ক্লাবের বয়সভিত্তিক দলে খেলছেন ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র। এর আগে তিনি বাবার সাবেক দুটি ক্লাব, ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং ইতালির জুভেন্টাসের বয়সভিত্তিক দলেও খেলেছেন।
আল নাসরের হয়ে দারুণ পারফর্ম করে আলোচনায় আসেন জুনিয়র। কয়েকদিন আগে একটি ম্যাচে গোল করার পর বাবার বিখ্যাত ‘সিউ’ উদ্যাপন করে সংবাদ শিরোনামেও চলে আসেন তিনি। তার দুর্দান্ত এই পারফরম্যান্সই তাকে পর্তুগাল অনূর্ধ্ব-১৫ দলের জন্য নির্বাচিত হতে সাহায্য করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভ্লাটকো মারকোভিচ টুর্নামেন্টে অভিষেক ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র এর
ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র এবার ভ্লাটকো মারকোভিচ টুর্নামেন্টে অংশ নেবেন পর্তুগালের হয়ে। এই টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হবে ক্রোয়েশিয়ায়, আগামী ১৩ মে থেকে ১৮ মে ২০২৫ পর্যন্ত।
টুর্নামেন্টে পর্তুগালের প্রতিপক্ষ হবে জাপান, গ্রিস এবং ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৫ দলগুলো।
এমন একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের প্রতিভার প্রদর্শন করতে পারা নিশ্চিতভাবেই জুনিয়রের জন্য বিশাল এক সুযোগ। বিশ্ব ফুটবলের চোখ থাকবে এই টিনেজার ফুটবলারের ওপর।
পাঁচটি দেশের বিকল্প ছিল ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র এর হাতে
অনেকেই জানেন না, ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র বিভিন্ন দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পেতেন। কারণ তার জন্ম এবং বেড়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে তার সামনে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, পর্তুগাল, আর্জেন্টিনা এবং আন্দোরা– এই পাঁচটি দেশের হয়ে খেলার সুযোগ ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত নিজের পিতৃভূমি পর্তুগালকেই বেছে নিয়েছেন তিনি।
এটা প্রমাণ করে, বাবার মতো দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধের দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছেন জুনিয়র।
বাবার উত্তরসূরি হতে প্রস্তুত ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র ?
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সফল ফুটবলার। পর্তুগালের জাতীয় দলকে প্রথমবারের মতো বড় কোনো আন্তর্জাতিক ট্রফি এনে দিয়েছেন তিনি — ২০১৬ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ২০১৯ সালের নেশনস লিগের শিরোপা।
এখন প্রশ্ন হলো, ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র কি বাবার দেখানো পথেই হাঁটতে পারবেন?
তার বর্তমান পারফরম্যান্স এবং দৃষ্টিভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে, তার মধ্যে সেই সম্ভাবনা প্রবলভাবে বিদ্যমান। বয়সভিত্তিক দল থেকে মূল জাতীয় দলে উঠে আসতে হলে নিয়মিত পরিশ্রম এবং উন্নতি করতে হবে। তবে প্রতিভা এবং পরিবারিক পৃষ্ঠপোষকতা তাকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে।
ভবিষ্যতের স্বপ্ন
অনেক ফুটবল বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র হতে পারে একটি নতুন অনুপ্রেরণার নাম। যদি তিনি নিজের প্রতিভা কাজে লাগাতে পারেন, তবে হয়তো বিশ্ব ফুটবল আবারও এক ‘রোনালদো যুগের’ সাক্ষী হবে, এবার ভিন্ন প্রজন্মে।
ভক্তরা এখন অপেক্ষায় আছেন জুনিয়রের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখার জন্য। তার ফুটবল দক্ষতা, খেলার প্রতি নিবেদন, এবং বাবার মতো সাফল্য এনে দেয়ার ইচ্ছা ফুটবল বিশ্বে নতুন উত্তেজনা যোগ করছে।
শেষ কথা ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র অনূর্ধ্ব-১৫ দলে | রোনালদো পুত্রের নতুন যাত্রানিয়ে
ক্রিস্টিয়ানো জুনিয়র এর এই যাত্রা শুধু একটি নতুন ফুটবলারের উত্থানের গল্প নয়, বরং এটি একজন কিংবদন্তির উত্তরাধিকারের শুরু। পর্তুগাল অনূর্ধ্ব-১৫ দলে তার অভিষেকের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে এক নতুন অধ্যায়।
এখন দেখা যাক, বাবার মতোই তিনি বিশ্বের ফুটবল মানচিত্রে নিজের জায়গা করে নিতে পারেন কি না।